বিভিন্ন প্রকার সংখ্যা( Different Kinds of Numbers)

সংখ্যা: সংখ্যা হলো এক ধরনের চিহ্ন বিশেষ, যা কোনো কিছুর পরিমাণ নির্দেশ করে এবং যা গণনার কাজে ব্যবহৃত হয়। সংখ্যা হলো পরিমাপের একটি বিমূর্ত ধারণা । সংখ্যা প্রকাশের প্রতীকগুলিকে বলা হয় অঙ্ক। দশটি অঙ্ক সহ আরও কতকগুলি চিহ্নের ( যেমন দশমিক বিন্দু , বর্গ , বর্গমূল ইত্যাদি ) সাহায্যে যা তৈরি হয়, তাকে সংখ্যা বলে। 

বাস্তব সংখ্যা (Real Numbers): শূন্য সহ সকল মূলদ এবং অমূলদ সংখ্যাকে বাস্তব সংখ্যা বলে।  উদাহরণ স্বরূপ: 0, 1, 2, 3, -0, -1, -2, -1/2 সব। বাস্তব সংখ্যার সেট R দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

অবাস্তব সংখ্যা (Imaginary Numbers): কোনো সংখ্যাকে বর্গ করলে যদি ঋণাত্মক সংখ্যা পাওয়া যায়, তাহলে তাকে অবাস্তব সংখ্যা বলে। যেমন: √-2, √-5   (√-2)^2 = -2। বাস্তব সংখ্যার সাথে i থাকলে তা অবাস্তব সংখ্যা হয়, যেমন: 3i, 5i, 7i।

জটিল সংখ্যা( Complex Numbers): বাস্তব ও অবাস্তব সংখ্যা মিলে যে সংখ্যা তৈরি হয় তাকে জটিল সংখ্যা বলে। ইহাকে  𝑎 ± 𝑖 𝑏 a±ib আকারে প্রকাশ করা হয়। যেমন: 2+ 3i , 5- 4i, 7 +2i

অনুবন্ধী সংখ্যা (Complex Conjugate Numbers): কোনো জটিল সংখ্যার অবাস্তব অংশের পূর্বে যে চিহ্ন বিদ্যমান থাকে উহার বিপরীত চিহ্নযুক্ত জটিল সংখ্যাকে ১ম জটিল সংখ্যার অনুবন্ধী সংখ্যা বলে। যেমন: 3 + 5i এর অনুবন্ধী সংখ্যা হবে 3 – 5i, 7 – 4i এর অনুবন্ধী সংখ্যা 7+4i.

স্বাভাবিক সংখ্যা (Natural Numbers): 1,2,3,4,… ইত্যাদি স্বাভাবিক সংখ্যা। 2, 3, 5, 7 ইত্যাদি মৌলিক সংখ্যা এবং 4, 6, 8, 9 ইত্যাদি যৌগিক সংখ্যা। দুইটি স্বাভাবিক সংখ্যার গ.সা.গু. 1 হলে এদেরকে পরস্পরের সহমৌলিক বলা হয়। যেমন 6 ও 35 পরস্পরের সহমৌলিক 1। স্বাভাবিক সংখ্যার সেটকে N দ্বারা প্রকাশ হয়।

পূর্ণসংখ্যা (Integer): শূন্যসহ সকল ধনাত্মক ও ঋণাত্মক অখন্ডক সংখ্যাকে পূর্ণসংখ্যা বলা হয়। অর্থাৎ -3 , -2 , -1 , 0 ,1 , 2, 3 ইত্যাদি পূর্ণসংখ্যা।

ভগ্নাংশ সংখ্যা (Fractional Numbers): 𝑝/𝑞 আকারে কোনো সংখ্যাকে সাধারণ ভগ্নাংশ বলে। যেখানে q ≠ 0 এবং q ≠ 1। যেমন 1/2, 3/2 ইত্যাদি সাধারণ ভগ্নাংশ। কোনো সাধারণ 𝑝/𝑞 ভগ্নাংশে p < q হলে প্রকৃত ভগ্নাংশ এবং p > q হলে অপ্রকৃত ভগ্নাংশ। যেমন: 5/13 প্রকৃত ভগ্নাংশ আবার 13/5 অপ্রকৃত ভগ্নাংশ।

মূলদ সংখ্যা (Rational Numbers):  𝑝/𝑞 আকারের যেকোনো সংখ্যাকে মূলদ সংখ্যা বলে, যখন p ও q পূর্ণসংখ্যা এবং q ≠ 0। যেকোনো মূলদ সংখ্যাকে দুইটি সহমৌলিক সংখ্যার অনুপাত হিসেবেও লেখা যায়। সকল পূর্ণসংখ্যা ও ভগ্নাংশই মূলদ সংখ্যা। যেমন 3/1 = 3, 11/2 = 5.5, 5/3 = 1.666 … সকল পূর্ণসংখ্যা ও ভগ্নাংশই মূলদ সংখ্যা।

অমূলদ সংখ্যা (Irrational Numbers): যে সংখ্যাকে 𝑝/𝑞 আকারে প্রকাশ করা যায় না, যেখানে p ও q পূর্ণসংখ্যা এবং q ≠ 0, সে সংখ্যাকে অমূলদ সংখ্যা বলা হয়। পূর্ণবর্গ নয় এরূপ যেকোনো স্বাভাবিক সংখ্যার বর্গমূল কিংবা তার ভগ্নাংশ একটি অমূলদ সংখ্যা। যেমন: √2 = 1.414213…., কোনো অমূলদ সংখ্যাকে দুইটি পূর্ণসংখ্যার অনুপাত হিসেবে প্রকাশ করা যায় না।

যে সংখ্যাকে কেবল এক (১) এবং ঐ সংখ্যা ছাড়া অন্যকোনো সংখ্যা দ্বারা ভাঙা বা ভাগ করা যায়না তাকে মৌলিক সংখ্যা বলে। যেমনঃ ২ (একমাত্র জোড়-মৌলিক সংখ্যা), ৩,৫,৭,১১,১৩,১৭,১৯………..। মৌলিক সংখ্যার কেবলমাত্র দুটো পৃথক উৎপাদক আছে- ১ এবং ঐ সংখ্যাটি নিজে।   মূলদ সংখ্যা ও অমূলদ সংখ্যাকে দশমিক দ্বারা প্রকাশ করা হলে তাকে দশমিক ভগ্নাংশ বলে। যেমন- 1.66, 1.65  ইত্যাদি।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url